হাঁদাগঙ্গারাম

বিচলিত গঙ্গারাম। আমার বন্ধু। তার কথা কী লিখিব! “কী লিখিব!” এই বাক্য জিজ্ঞাসা নয়, হায় হুতাশ।

তার সমস্যা ব্যক্ত হওয়ার। এবং গঙ্গারাম, কী অর্থ হয় এই বেঁচে থাকার? এই তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখছি আমি। পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ছে। আহা আমাদের দিনগুলি।

এবং আজি দিন যায়। দিন বড় তাৎক্ষণিক যায়। দিন তোমার সঙ্গে কোনো সংশ্রব রাখছে না। তুমি নিতান্ত এক গঙ্গারাম। লক্ষ রাখো সর্বদাই, যাতে-না ক্ষুণ্ন হয় শিল্পের সুষমা। যাতে, যথার্থ শিল্পের কথা সর্বদাই বলে যেতে পারো।

আজ মন বড় উতলা। আজ মন তোমার কথাই।

জ্যামিতি-আসক্ত গঙ্গারাম। গভীর বৃত্তে বসবাস। ইউক্লিডিয়ান। ঘূর্ণন গতিবিদ্যার বিষয়। তার প্রতি নিবেদিত শাশ্রুকথন। পাঠকালে দু’নয়নে জলসংসর্গ প্রয়োজন। বিশুদ্ধ খনিজ। অথবা উড্ডীন:

১.
গঙ্গারামের দুঃখ, দুঃখের কারণ—শুনবেন, শুনবেন—কিন্তু
কারো কাছে প্রকাশ করবেন না।

২.
এবার দাঁড়াও উদাহরণ
যা কিছু কার্য এবং কারণ
সম্প্রসারিত হোক।

৩.
পরম্পরার প্রতি অধিক ভক্তিতে
নুয়ে পড়ছে গঙ্গারাম, তার
ছায়া পড়ছে উপচ্ছায়াবৃন্দের মাথায়।

৪.
ঐ যে নবিশবৃন্দ, মহাদশাপ্রাপ্ত তারা ক্ষুদ্র আয়তনে
আহ্নিক-বার্ষিক গতি লক্ষ রেখে সাহিত্যবিস্তার
করিতেছে, তাহাদের সঙ্গে বলো তোমার কী দরকার?

৫.
স্বতঃই ঘটনা তাই সদাই ঘটছেন
তুমি থাকো কিংবা নাহি থাকো
তাহারা থাকছেন।

৬.
কী বোঝে শরৎবাবু, যে তাঁর সঙ্গে হাঁদা গাধাগঙ্গারাম
বসে থাকবে একই ঘরে
কথা বলবে স্পষ্টতই, সাহিত্য বিষয়ে?

৭.
ঠোলাদের তার মনে হয় পাখি
তাদেরই সঙ্গে
যত ডাকাডাকি।

৮.
ও ভাই তদানীন্তন,
দিন যে গেল দেখতে দেখতে
এখন কী করি?

৯.
আজ দুঃখের দিনে ঠাকুর মহাশয়
অনেক দূরে থাকেন।

১৯৯২

Leave a Reply